1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

ক্ষমতা থাকলে বিজেপি ভাঙিয়ে দেখান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর দিল্লি থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হুঙ্কার শুভেন্দুর

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১
  • ১৭৯ Time View

বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা :

ক্ষমতা থাকলে বিজেপি ভেঙে দেখাক তৃণমূল। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর এ ভাবেই তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করে রীতমতো হুঙ্কার দিলেন পশ্চিমবাংলার বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গে বৈঠকের পর দিল্লি বিজেপি ডেকে পাঠিয়েছে তিন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, নিশীথ প্রামাণিক আর অর্জুন সিংকে। তবে তাঁদের কেন দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে, সে বিষয়ে অবশ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা কোনও মন্তব্য করেননি।

বিজেপি ছেড়ে অনেকেই নাকি এখন তৃণমূলে আসতে চাইছেন। সেই তালিকায় যেমন রয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অনেক হেরে যাওয়া নেতা, যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তেমনই রয়েছেন মুকুল রায়–সহ আরও অনেক নেতা, যাঁরা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়ে নির্বাচনে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। আবার আগাগোড়া বিজেপি করছেন, এবারও নির্বাচনে জিতেছেন, এমন বিধায়কও নাকি তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন। এ ব্যাপারে এবার মুখ খুললেন স্বয়ং রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
দিল্লি থেকে রীতিমতো কড়া ভাষায় তিনি বলেন, ‘দল ভাঙানোর খেলা এই রাজ্যে শুরু করেছিল তৃণমূলই। তখন সিপিএম আর কংগ্রেস ছিল প্রধান বিরোধী দল। কিন্তু মনে রাখবেন, এখন রাজ্যের বিরোধী দল তারা নয়, এখন রাজ্যের প্রধান এবং একমাত্র বিরোধী দল বিজেপিই। আর সেই বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী। হ্যাঁ, আমি। সেই আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, ক্ষমতা থাকলে দল ভাঙিয়ে দেখান। তার পর দলত্যাগ–বিরোধী আইন কীভাবে কাজে লাগাতে হয়, সেটা আমার ভালো মতোই জানা আছে। স্পিকারকে দিয়ে আগের মতো সেই দাবিকে ঠান্ডা ঘরে ফেলে রাখা যাবে না।’

শুধু শুভেন্দু অধিকারীই নন। এই একই কথা কলকাতা থেকে শোনা গিয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মুখেও। তিনিও পরিষ্কার বলেছেন, ‘এমন কথা তো তৃণমূল নেতারা নতুন বলছেন না। এমন কথা অনেকবারই তাঁরা বলেছেন। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, ক্ষমতা থাকলে তাঁরা আমাদের বিধায়কদের ভাঙিয়ে দেখান।’ কলকাতায় যখন এ ভাবে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ করছেন দিলীপ ঘোষ, তখন দিল্লিতে রীতিমতো নিজের দাপট দেখিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। মঙ্গলবারই তিনি বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সঙ্গে। আর বুধবার তিনি বৈঠক করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে।
এদিন বেলা ১২টা নাগাদ তিনি দিল্লির ৭ নম্বর লোককল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যান। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ৪৫ মিনিটেরও বেশি সময় বৈঠক করেন। বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই প্রথম রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে রাজ্যের কোনও নেতা বৈঠক করলেন। বৈঠকে রাজ্যের আইন–শৃ্ঙ্খলা পরিস্থিতি, বিজেপির আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে দু’জনের কথা হয়েছে বলে খবর। আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে বাংলায় বিজেপির ভোট পরবর্তী কৌশল। তবে বৈঠক নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় বা শুভেন্দু অধিকারী কোনও তরফেই বিশেষ কোনও কথা বলা হয়নি। অবশ্য এই বৈঠক থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। বাংলা নিয়ে কথা বলার জন্য স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা কলকাতা থেকে প্রথম ডেকে পাঠিয়েছেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায় বা কৈলাস বিজয়বর্গীকে নয়, ডেকেছেন শুভেন্দু অধিকারীকে। তার মানে বাংলায় শুভেন্দুকেই তাঁরা সর্বোচ্চ নেতা বলে মনে করছেন।

এ কথা সত্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর ক্ষমতা রয়েছে তাঁরই। বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে হারিয়েছেনও। মনে করা হচ্ছে, এবার রাজ্য বিজেপিকে শুভেন্দুর মাধ্যমেই নির্দেশ বা পরামর্শ দেবে দিল্লি। তা ছাড়া পশ্চিমবাংলার সংবাদ মাধ্যম যতই প্রচার করুক না কেন, রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে, তা কিন্তু নয়। আগের বারের ৩ জন বিধায়ক থেকে রাজ্যে এবার ৭৭ জন বিধায়কে পৌঁছে গিয়েছে বিজেপি। এ ছাড়া ১৮ জন সাংসদও রয়েছেন বাংলায়। সুতরাং বিজেপিকে উড়িয়ে দেওয়ার পর পরিস্থিতি বাংলায় মোটেও তৈরি হয়নি।

তাই দিল্লি রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সংবিধান বিরুদ্ধ এবং অগণতান্ত্রিক মনোভাবকে নমনীয় দৃষ্টিতে দেখবেন না প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বাংলার মানুষের পাশে সবসময় থাকবে কেন্দ্রীয় সরকার। তার প্রমাণ ইতিমধ্যে পাওয়া গিয়েছে কোভিড এবং ইয়াস পরিস্থিতিতে রাজ্যকে সাহায্য করা, বা বজ্রাঘাতে রাজ্যে নিহত এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মধ্যেও। এ ছাড়া আগে রাজ্যে কিসান সম্মান নিধির বাস্তবায়ন ঘটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এর মধ্য দিয়ে রাজ্যবাসীকে কেন্দ্রীয় সরকার বার্তা দিতে চাইছে, বিজেপি ভোটে তৃণমূলের চেয়ে কম আসন পেলেও বাংলার মানুষের কল্যাণের কাজে সবসময় তৎপর থাকবে।

সূত্রের খবর, ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে বাংলা জুড়ে যে ভাবে বিজেপি নেতা ও কর্মীদের ওপর তৃণমূল হামলা চালাচ্ছে, পুলিশি নির্যাতন চলছে, অন্যায় ভাবে মিথ্যে মামলায় তাঁদের জড়ানো হচ্ছে এবং যতজন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছে, সেই বিষয়ে শুভেন্দু বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। ব্যক্তিগত ভাবে বিজেপিকেও যে মিথ্যে মামলায় তৃণমূল এবং পুলিশ ফাঁসানোর চেষ্টা করছে, সে কথাও প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন শুভেন্দু।

রাজনৈতিক মহলের মতে, পৌনে এক ঘণ্টার বেশি সময় বৈঠক হয়েছে দু’জনের। এর অর্থ, বৈঠকে যেমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা হয়েছে, তেমনই ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক পরিকল্পনাও করা হয়েছে সেখানে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেন্দুর বৈঠক নিয়ে যখন জাতীয় এবং রাজ্য রাজনীতি সরগরম, তখন আচমকাই এদিন দিল্লি উড়ে যান বিজেপির আরও তিন সাংসদ। সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, নিশীথ প্রামাণিক আর অর্জুন সিংকে কেন দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে, তা নিয়ে বিস্তারিত জানা না গেলেও শোনা যাচ্ছে, রাজ্য বিজেপির নীতি, কৌশল এবং তৃণমূলের সন্ত্রাস নিয়েও তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।

শুভেন্দুর দিল্লি সফরের কারণ নিয়ে যেমন রাজ্য বিজেপির নেতারা বিস্তারিত জানতেন না, তেমনই এই তিনজনের দিল্লি সফর নিয়েও ধোঁয়াশায় রয়েছেন তাঁরা। তাই সূত্রের খবর, এর পর মুকুল রায়কেও দিল্লি ডেকে পাঠাতে পারে। তবে, বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন কলকাতায় নিজের অনুগামীদের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেছেন মুকুল। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল যাবেন কিনা, না গেলে বিজেপিতে কী করবেন, বা তৃণমূল গেলে কী ভাবে যেতে পারেন, তা নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে এই আলোচনার সত্যতা জানা যায়নি।

অন্যদিকে, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ঘুরিয়ে বিজেপির সমালোচনা করে গোপনে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, তখন ডোমজুড়ে দেখা গেল ভিন্নচিত্র। ওই বিধানসভার বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল কর্মীরা রাজীবের বিরুদ্ধে পোস্টার লাগান। সেখানে রাজীবকে তাঁরা ‘মিরজাফর’, ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে উল্লেখ করেন। শুধু তাই নয়, তাঁকে দলে ফিরতে দেওয়া হবে না বলেও পোস্টারে লেখা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..